ঘুম না হলে কী হয়? কম ঘুমের ৭টি ভয়ঙ্কর স্বাস্থ্যঝুঁকি
আজকাল অনেকেই ঘুমকে গুরুত্ব দেন না। প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার, মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপন—সবকিছু মিলে বাড়ছে ঘুমের সমস্যা। অথচ পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মনের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
এই লেখায় জানবে, ঘুমের সমস্যা শরীরে কী ধরনের ক্ষতি করে এবং কীভাবে তা প্রতিরোধ করা যায়।
১. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়
ঘুম না হলে মনোযোগ কমে, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। ঘন ঘন ঘুমের সমস্যা থাকলে ব্রেইন ফাংশন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২. মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশন বাড়ে
কম ঘুমের কারণে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে করে মানসিক অস্থিরতা, উদ্বেগ ও ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। যারা দীর্ঘদিন ঘুমের সমস্যায় ভোগে, তারা মানসিক রোগের ঝুঁকিতে থাকে।
৩. ওজন বৃদ্ধি ও হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
ঘুম কম হলে শরীরে লেপটিন ও ঘরলিন নামক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বারবার খেতে ইচ্ছা হয় এবং ওজন বাড়ে।
৪. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হৃদস্পন্দনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। যারা ঘুমের সমস্যা নিয়ে ভোগেন, তাদের মধ্যে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
৫. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে
ঘুম শরীরের কোষ মেরামতের সময়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে বারবার অসুস্থ হওয়া বা ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৬. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়
ঘুমের ঘাটতি ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গিয়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়।
৭. ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়
ঘুম কম হলে ত্বক শুষ্ক ও মলিন দেখায়। চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে এবং ত্বকের বলিরেখা দ্রুত বাড়ে।
কীভাবে ঘুমের সমস্যা দূর করা যায়?
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করো
- শোয়ার আগে মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যবহার কমাও
- হালকা খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাও
- ঘুমের আগে ক্যাফেইন ও চা-কফি পরিহার করো
- মেডিটেশন বা হালকা বই পড়ার অভ্যাস গড়ো
উপসংহার:
ঘুমের সমস্যা যতটা সহজভাবে নেয়া হয়, ততটাই বিপজ্জনক হতে পারে এর ফলাফল। নিয়মিত ঘুম না হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া খুব স্বাভাবিক। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি।