ওটিটি সিরিজে ব্যবহৃত বাড়ির সব ঘর আসল নয়—অনেক ঘর আসলে একটাই ঘর, শুটিং অ্যাঙ্গেল বদলে ফেলা হয়!
আপনি কি কখনো ভেবেছেন, একেকটি ওটিটি সিরিজে যে বিশাল বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট দেখানো হয়, তার প্রতিটি ঘর কি সত্যিই আলাদা আলাদা? বাস্তবটা জানলে আপনি চমকে যাবেন। একাধিক জনপ্রিয় সিরিজে আসলে একটি মাত্র ঘরকে ভিন্ন ভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ও সাজসজ্জায় উপস্থাপন করেই পুরো বাড়ির ছাপ দেওয়া হয়।
একঘরেই ড্রইং রুম, আবার সেখানেই বেডরুম!
শুটিং সেটের অন্যতম বড় কৌশল হচ্ছে জায়গার সর্বোচ্চ ব্যবহার। নির্মাতারা এমনভাবে ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ঠিক করেন যাতে একটি ঘরকে কখনো বসার ঘর, আবার কখনো শোবার ঘর মনে হয়। পর্দায় যে ঘর আলাদা মনে হয়, বাস্তবে সেটি একই ঘর—শুধু ভিন্ন আলো, ক্যামেরার দিক ও কিছু আসবাবের অদলবদল!
ক্যামেরা ও আলোয় হয় বিভ্রান্তি
চোখকে ধোঁকা দিতে ক্যামেরার লেন্স, ফ্রেমিং এবং আলো নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একটি ছোট ঘরকে বড় দেখাতে ওয়ার অ্যাঙ্গেল লেন্স ব্যবহার হয়। আলোর মাধ্যমে কোণ তৈরি করে ঘরকে আলাদা জায়গা বলে উপস্থাপন করা হয়। ফলে আপনি যা দেখছেন, সেটি এক ধরনের সিনেমাটিক ইলিউশন।
একই দরজা, আলাদা দেয়াল!
অনেক সময় একই দরজার দুই পাশে আলাদা ব্যাকগ্রাউন্ড রাখা হয়। অভিনেতা একটি দরজা দিয়ে ঢুকলেই মনে হয় তিনি অন্য একটি ঘরে গেছেন। কিন্তু বাস্তবে সেটি একই ঘর, যার দেয়ালের পেছন অংশ একটু রদবদল করলেই হয়ে যায় সম্পূর্ণ নতুন ঘর!
কেন এই কৌশল ব্যবহৃত হয়?
মূল কারণ বাজেট এবং সময় বাঁচানো। প্রতিটি ঘরের জন্য আলাদা সেট তৈরি করলে সময় ও খরচ দুই-ই বাড়ে। তাই নির্মাতারা একই ঘরকে রিডিজাইন করে একাধিক ঘরের ইফেক্ট দেন। এই পদ্ধতিতে দিনে একাধিক দৃশ্য শুট করা যায় এবং লোকেশন চেঞ্জের ঝামেলা কমে।
প্রযুক্তি আরও এগিয়ে দিচ্ছে
বর্তমানে গ্রিন স্ক্রিন, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস (VFX) ও ভার্চুয়াল ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করে ঘরকে আরও বৈচিত্র্যময় দেখানো হয়। এমনকি কখনো কখনো ঘরটাই ডিজিটালি রেন্ডার করা হয়, বাস্তবে সে রকম কিছুই থাকেনা!
শেষ কথা
আপনি যে ওটিটি সিরিজে দেখেন একটি চারতলা বাড়ি, বাস্তবে হয়তো সেটি একটি মাত্র ঘরের সেট—যেটিকে নানান রূপ দেওয়া হয়েছে। সিনেমার এই কৌশলগুলো জানলে বোঝা যায়, দর্শকের চোখ ধাঁধানোর জন্য পর্দার পেছনে ঠিক কতটা পরিকল্পনা ও কল্পনা কাজ করে!