নেইমারের পেনাল্টি নেওয়ার আগে যে ছোট্ট অভ্যাসটি বদলে দিয়েছে তার ক্যারিয়ার!
নেইমার জুনিয়র—নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ড্রিবল, গতি আর গোলের ঝড়। তবে তার ক্যারিয়ারে একসময় ছিলো এক অদৃশ্য দুর্বলতা—পেনাল্টি। তিনি গোল করলেও, সমালোচকরা বলতেন, “নেইমার চাপে ভেঙে পড়েন।” কিন্তু এক ছোট্ট অভ্যাস বদলে দিয়েছে তার পুরো পেনাল্টি স্টাইল এবং সম্ভবত, তার ক্যারিয়ার।
শুরুটা ছিলো হতাশাজনক
২০১৪ বিশ্বকাপের পর নেইমার পেনাল্টি স্পট থেকে কয়েকবার ব্যর্থ হন। বিশেষ করে বড় ম্যাচে তার পেনাল্টি নেওয়ার সময় ভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কখনও বেশি দেরি, কখনও ছলচাতুরির চেষ্টা—সব মিলিয়ে গোলরক্ষকরা যেন পড়ে ফেলছিলেন তার মনস্তত্ত্ব।
বদলের সূচনা: মনস্তত্ত্বের অনুশীলন
২০২০ সালে পিএসজি-তে খেলার সময়, ব্রাজিলিয়ান এক স্পোর্টস সাইকোলজিস্ট নেইমারকে একটি ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল শেখান—পেনাল্টির আগে ৩ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে শ্বাস নেওয়া।
এই অভ্যাসে কী হয়?
নেইমার এই নতুন অভ্যাস অনুযায়ী, পেনাল্টি স্পটের সামনে দাঁড়িয়ে ৩ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে গভীরভাবে শ্বাস নেন। এতে তার হৃদস্পন্দন স্থির হয়, মাথা ঠান্ডা থাকে, এবং প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে অবচেতনে অস্থির করে তোলা যায়।
পরিসংখ্যান বলছে স্পষ্ট পার্থক্য
এই অভ্যাস চালু করার আগে নেইমারের পেনাল্টি সাফল্যের হার ছিল প্রায় ৭৬%। কিন্তু ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সেই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১%-এ! শুধু তাই নয়, এই সময়ের মধ্যে তার নেওয়া ২২টি পেনাল্টির মধ্যে ২০টিই ছিল সফল।
ম্যাচ জয়ের মোক্ষম অস্ত্র
পিএসজির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আটলান্টার বিরুদ্ধে ২০২0 সালে নেওয়া পেনাল্টি ছিল এই অভ্যাসের প্রথম প্রকাশ। সেদিন ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, “আমি এখন আর শুধু বল দেখি না, নিজের ভেতরের শান্তিটাও দেখি।”
অন্যান্যরাও অনুসরণ করছেন
এই কৌশল দেখে অনেক ফুটবলার—যেমন রিচার্লিসন, ভিনিসিয়াস জুনিয়র—নেইমারের পদ্ধতি অনুসরণ শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটা শুধু কৌশল নয়, বরং এক মনস্তাত্ত্বিক জাদু!
শেষ কথা
ফুটবলে সাফল্য শুধু পায়ের খেলায় নির্ভর করে না, মনের খেলাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। নেইমার সেটাই প্রমাণ করেছেন একটি ছোট্ট অভ্যাস দিয়ে। আজ পেনাল্টি মানেই তার জন্য গোলের সুযোগ, আর সমর্থকদের জন্য এক প্রশান্তির নিঃশ্বাস।