গ্রামের লোকজন বলছেন: “সান্ডা ভাইরাল হইছে বইলা কেউ গুই সাপ খায় নাকি?”
বিশেষ প্রতিনিধি, ডেইলি ভূবাবার্তা
দিনাজপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে আজ সকালেই ঘটল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া “সান্ডা” নামক ট্রেন্ড থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এক যুবক পুকুর থেকে গুই সাপ ধরে এনে রান্না করে খেয়ে ফেলেন। পরিণতিতে, তিনি শারীরিকভাবে চরম অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয়রা ঘটনার বিস্তারিত জানতে গেলে আরও অবাক করা তথ্য সামনে আসে।
“ভাই সান্ডা খাইলে নাকি পাওয়ার বাড়ে, আমি ভাবলাম এইডাও সান্ডা”
মৃত যুবক রকিব (২৫) ছিলেন একজন সোশ্যাল মিডিয়া আসক্ত তরুণ। তার বন্ধুরা জানান, সে গত দুই দিন ধরে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সান্ডা ভিডিওগুলো দেখে উত্তেজনায় ছিলো। “ভাই, এই সান্ডা জিনিসটা দেখার পর থেকেই সে রিসার্চে নেমে পড়ে। বলে, আমিও সান্ডা খামু! কিন্তু আমরা বুঝছিলাম না, সে কোন সান্ডার কথা বলতেছে!”
পুকুরের গুই সাপকে ‘লোকাল সান্ডা’ ধরে নিয়ে রান্না!
রকিবের মা জানান, “গতকাল পুকুরে চান করতে গিয়া একটা গুই সাপ বাইর করে। বলে, এইডা নাকি দেশেরী সান্ডা। পরে হুজুর ডেকে জবাই কইরা, মসলা দিয়া রেঁধে খায়।”
খাওয়ার এক ঘণ্টা পর থেকেই রকিবের পেট ব্যথা শুরু হয়, সঙ্গে ঘোরের মতো অবস্থা। হাসপাতালে নেয়ার আগেই সে জ্ঞান হারায়।
চিকিৎসক বলছেন: ‘সান্ডা ভাইরাল হইছে, বিষক্রিয়া না!’
দিনাজপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, “আমরা প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না। পরে তার বন্ধুদের কাছ থেকে শুনে বুঝলাম, সে গুই সাপ খাইছে ভাইরাল সান্ডা ভেবে। এটা নিছক বিষক্রিয়া না, এটা ভাইরাল ফাঁদে পা দেয়া!”
গ্রামে এখন সতর্কতা: “সান্ডা মানেই সব কিছু খাইলে হবে না”
স্থানীয় মসজিদের খতিব আজ শুক্রবারের খুতবায় বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ভাইরাল হয়, তা খাওয়া যায় না। সান্ডা ইংল্যান্ডের দল হইলেও গুই সাপ আমাদের লোকাল প্রাণী, দুইটা এক জিনিস না।”
ফেসবুকের দোষ দিলেন মৃতের বড় ভাই
রকিবের বড় ভাই বলেন, “ফেসবুকে এইসব ভাইরাল জিনিস বন্ধ করা দরকার। কালকে সান্ডা, পরশু হইবো সিংহের মাংস ভাইরাল। তখন তো মানুষ চিড়িয়াখানায় যাইতে পারে।”
বিশেষ নোট: পরবর্তী ভাইরাল ট্রেন্ড যদি হয় ‘বাঁশের কাণ্ড’, দয়া করে কেউ বাঁশ খাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
শেষ কথা:
সান্ডা খেতে চাইলে ফুটবল দেখুন, গুই সাপ না।
আর সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল ট্রেন্ড মানেই “স্বাদ” না—অনেক সময় সেটা “সাজা”ও হতে পারে!