হিট স্ট্রোক এর ঝুঁকি বাড়ছে: কীভাবে সতর্ক থাকবেন এই তীব্র তাপে?

হিট স্ট্রোক

গরমে হিট স্ট্রোক এর ঝুঁকি বাড়ছে: কীভাবে সতর্ক থাকবেন এই তীব্র তাপে?

হিট স্ট্রোক গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর যখন স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তখনই দেখা দেয় হিট স্ট্রোক। এটি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা, যা দ্রুত চিকিৎসা না পেলে প্রাণঘাতীও হতে পারে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ায় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে।

হিট স্ট্রোক কী?

হিট স্ট্রোক হলো এমন একটি অবস্থা, যখন শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F (৪০°C) বা তার চেয়েও বেশি হয়ে যায় এবং শরীরের স্বাভাবিক কুলিং মেকানিজম ব্যর্থ হয়। এতে করে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি ও পেশিতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ:

  • তীব্র মাথাব্যথা
  • বিভ্রান্তি বা অচেতনতা
  • গা গরম ও ঘাম না হওয়া
  • শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • দ্রুত হার্টবিট

এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ঠান্ডা স্থানে নিয়ে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে কারা?

  • বয়স্ক মানুষ (৬৫ বছরের বেশি)
  • শিশুরা
  • দীর্ঘসময় রোদে কাজ করা মানুষ (যেমন নির্মাণ শ্রমিক, কৃষক)
  • যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ রয়েছে
  • যারা পর্যাপ্ত পানি পান করেন না

হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়:

১. পানি পান করুন নিয়মিত:
প্রতিদিন অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন। তেষ্টা না পেলেও পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।

২. রোদ এড়িয়ে চলুন:
দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। এই সময় বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন।

৩. হালকা ও ঢিলা পোশাক পরুন:
সাদা বা হালকা রঙের কটন পোশাক শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

৪. ছাতা, টুপি ও সানগ্লাস ব্যবহার করুন:
রোদ থেকে সরাসরি ত্বক ও চোখ বাঁচাতে এগুলো কার্যকর।

৫. ইলেক্ট্রোলাইট জাতীয় পানীয় পান করুন:
লবণ-চিনি মিশ্রিত ORS, ডাবের পানি বা ফলের শরবত শরীরে লবণ-পানি বজায় রাখতে সহায়ক।

৬. গৃহস্থালি ও কর্মস্থলে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল রাখুন:
ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার চালু রাখুন, দরজা-জানালা খুলে রাখুন।

শেষ কথা:

হিট স্ট্রোক একটি নীরব ঘাতক। সামান্য সতর্কতায় এই প্রাণঘাতী সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। গরমের দিনে শরীরকে হাইড্রেটেড ও ঠান্ডা রাখা, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়াই হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার চাবিকাঠি। যদি কখনও উপসর্গ দেখা দেয়, দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা নিন।

 

এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আরও পড়ুন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *