চুয়াডাঙ্গায় প্রথমবারের মতো চালু হলো ‘দুঃখ মেলা’, যেখানে সবাই এসে কাঁদতে পারে

চুয়াডাঙ্গা, ১২ মে (ভুয়াবার্তা প্রতিনিধি)

যেখানে আনন্দ মেলা সেখানে দুঃখ মেলা! ঠিক এই ভিন্নস্বাদের ভাবনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে আয়োজন করা হয়েছে দেশের প্রথম ‘দুঃখ মেলা’। স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন “হাহাকার সংঘ” এবং জনপ্রিয় কান্না-আশ্রয়কেন্দ্র “আহারে হিয়া ক্লাব” যৌথভাবে এই ব্যতিক্রমধর্মী ইভেন্টের আয়োজন করে।

মেলায় অংশগ্রহণকারীরা কোনো আনন্দ নয়, বরং জীবনের সব হতাশা, ব্যর্থ প্রেম, বাতিল হওয়া চাকরি, বিসিএসের ভাইবা না ডাকা, প্রেমিকের ব্লক দেওয়া, বা ফেসবুকে React না পাওয়ার কষ্ট—সব কিছু কাঁদতে কাঁদতে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।

প্রবেশের আগে চোখে জল থাকতেই হবে

মেলায় প্রবেশের জন্য একটি বিশেষ শর্ত রাখা হয়েছে—প্রত্যেক দর্শনার্থীর চোখে কমপক্ষে একটি পানি জমা থাকা আবশ্যক। “অনেকেই কৃত্রিমভাবে চোখে পিয়াজ ঘষে ঢুকতে চেয়েছিল, কিন্তু আমরা কান্নার প্রকৃত Certificate ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিইনি,” বললেন মেলা নিরাপত্তা প্রধান কান্নু আলী।

কান্নার জোনে ভিড়

মেলায় রয়েছে তিনটি আলাদা কান্না জোন—

  • “Ex-ভবন”: যেখানে ব্রেকআপ-ক্লান্ত প্রেমিকরা রুমাল হাতে বসে ‘যদি একদিন’ শুনে হাহাকার করছেন।
  • “চাকরি নাই কর্নার”: এখানে শুধু চাকরি না পাওয়া তরুণদের জন্য। কেউ কেউ সিভি হাতে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন।
  • “মা-বাবার বকা হজম এলাকা”: যারা ‘তোমার বয়স কত হইছে এখনো কিছু করতে পারো না’ টাইপ বকা শুনে ক্লান্ত—তাদের কান্নার জায়গা এটি।

সেলফি তোলা নিষিদ্ধ, কান্না লাইভ চালানো অনুমোদিত

মেলায় হাস্য-তামাশা একেবারে নিষিদ্ধ। “এখানে কারো মুখে হালকা হাসিও আমরা সহ্য করি না। কে কাঁদছে বেশি তা লাইভে দেখানো যাবে, তবে মুখে স্মাইল ইমোজি দিলে জরিমানা ৫০ টাকা।” — জানালেন মেলা পরিচালনা কমিটির চিৎকার আহমেদ।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: দুঃখ অ্যাওয়ার্ড

আয়োজকরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তারা “জাতীয় কান্না প্রতিযোগিতা”, “দুঃখের কবিতা রাইটিং ক্যাম্প”, এবং “মনের কষ্ট ফুটবল টুর্নামেন্ট”-এর আয়োজন করবেন। যারা সবচেয়ে বেশি কান্না করবে, তাদের ‘দুঃখ রত্ন’ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে।

মানুষের প্রতিক্রিয়া

মেলায় আগত দর্শনার্থী রহিম বলেন, “আমি যখন বললাম—সে আর আমার মেসেজ সিন করে না, সবাই দাঁড়িয়ে আমাকে গলা জড়িয়ে ধরলো। এমন কান্নাভিত্তিক সংহতি আগে পাইনি।”

আরেক তরুণী সুমাইয়া বলেন, “আমি শুধু এখানে এসেছি শুনতে কে কার থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছে। শুনতে শুনতে নিজের দুঃখও হালকা লাগছে।”

বিশেষভাবে সংরক্ষিত কক্ষ

এছাড়াও, মেলায় রয়েছে একটি বিশেষ “VIP কান্না কক্ষ”, যেখানে সেলিব্রিটি বা উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিরা আসতে পারেন। সেখানে প্রতি ঘণ্টায় ১০০০ টাকা দিয়ে এক ঘণ্টার কান্নার বিশেষ সেশনও আয়োজন করা হচ্ছে, যা একেবারে এক্সক্লুসিভ।

এছাড়া “কান্না টুইটার” নামে একটি নতুন সেবা চালু হয়েছে, যেখানে দর্শনার্থীরা তাদের কান্নার অভিজ্ঞতা লাইভ টুইট করতে পারবেন। বর্তমানে এটি একেবারে ট্রেন্ডিং টপিক হয়েছে।


– রিপোর্ট: Daily Bhuabarta প্রতিনিধি দল