ফুটবলে জার্সি নাম্বার ১০-এর পিছনে লুকিয়ে আছে এক ঐতিহাসিক বিদ্রোহ!
আপনি যখন কোনো খেলোয়াড়ের পিঠে নাম্বার ১০ দেখতে পান, তখন হয়তো ভাবেন তিনি দলের সেরা। কিন্তু জানেন কি, এই নাম্বারটা শুধু প্রতিভার প্রতীক নয়, বরং এক সময় ছিলো বিপ্লবের নম্বর?
জার্সি নাম্বার ১০: শুরুটা কেমন ছিল?
ফুটবলে নাম্বারিং সিস্টেম চালু হয় ১৯৩০-এর দশকে। তখন খেলোয়াড়দের পজিশনের ওপর ভিত্তি করে নাম্বার নির্ধারণ হতো। নাম্বার ১০ সাধারণত খেলত অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে। কিন্তু এটা তখনও “বিশেষ” কিছু ছিল না।
পেলের পায়ে বিদ্রোহের শুরু
১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের পেলে যখন নাম্বার ১০ পরে বিশ্বকাপ খেললেন, তখনও কেউ বুঝতে পারেনি যে এই নম্বরটা ফুটবলের ভাষা বদলে দেবে। পেলে শুধু খেলেননি, বরং এক এক করে গোল করে জানান দিয়েছেন—নাম্বার ১০ মানে শ্রেষ্ঠত্ব। কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
ম্যারাডোনা: রাজনৈতিক প্রতিবাদের রূপকার
আর্জেন্টিনার ডিয়েগো ম্যারাডোনা ছিলেন একেবারেই অন্যরকম। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে নাম্বার ১০ পরে তিনি শুধু মাঠে জাদু দেখাননি, বরং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে “হ্যান্ড অব গড” গোল দিয়ে একরকম রাজনৈতিক প্রতিশোধই নিয়েছেন ফকল্যান্ড যুদ্ধের পটভূমিতে। সেই মুহূর্তে নাম্বার ১০ হয়ে ওঠে একটি বিদ্রোহের প্রতীক।
মেসি: নম্রতার বিপ্লব
লিওনেল মেসি যখন বার্সেলোনার হয়ে নাম্বার ১০ পরে মাঠে নামেন, তখন তিনি অন্যরকম এক বার্তা দেন—নম্রতা দিয়েও বিপ্লব সম্ভব। অহংকার ছাড়াই কিভাবে একজন মানুষ দুনিয়া কাঁপাতে পারে, তা দেখিয়েছে তার জার্সি।
জার্সি নাম্বার ১০: আজও বয়ে বেড়ায় এক ইতিহাস
আজকের দিনে নেইমার, মদ্রিচ বা ভিনিসিয়াসরাও নাম্বার ১০ পরে খেলেন। কিন্তু প্রতিটা নাম্বারের পেছনে আছে এক দীর্ঘ ইতিহাস—যেখানে প্রতিভা, প্রতিবাদ আর প্রভাব মিলেমিশে তৈরি করেছে এক ফুটবলিক আইকন।
শেষ কথা
ফুটবলে জার্সি নাম্বার ১০ কোনো সাধারণ সংখ্যা নয়। এটি প্রতীক একটি শক্তির, সাহসের এবং বিপ্লবের। ইতিহাস বলে, যখনই কেউ নাম্বার ১০ পরে মাঠে নামে, সে শুধু গোল দিতে নয়, ইতিহাস গড়তেও নামে।